মৃত্যু নিয়ে BrainGuru এর স্বীকার্যসমূহ আসুন রিয়েলাইজ করতে প্রয়াসী হই...
মানব জীবনে "মৃত্যু" এক রহস্যময় বিষয় যাতে নির্লিপ্তভাবে মিশে আছে নানান উপকথায় বহু কুসংস্কার - যা আমরা অদ্যবধি জানতে পারিনি সেটার সর্বোচ্চ সঠিক ও সত্য উত্তর হলো "জানি না" তবে এটার অর্থ এই নয় যে না জানার হেতু তাতে নানান অযৌক্তিক ও অপ্রমাণিত বিষয়ের সংযোজনে তাকে রহস্যময় করা কিংবা উক্ত অযৌক্তিক ও অপ্রমাণিত বিষয়গুলো সত্য বলে ভেবে নেওয়া বা দাবী করা!
"মৃত্যু হলো মানব জীবনের জটিল রাসায়নিক বিক্রিয়া বন্ধ হওয়া" যার বহু ফিজিক্যাল ও সাইকোলজিক্যাল কারণ থাকতে পারে।
মৃত্যু বলতে আমাদের বোঝা উচিত "ব্রেইন ডেথ" বা মস্তিষ্কের যাবতীয় কার্যকলাপ বা এক্টিভিটি কালপস করা - তাতে আমাদের যাবতীয় চিন্তা ও চেতনার সমাপ্তি ঘটে!
মৃত্যুর সময় কষ্ট হতে পারে বলে ধারনা করা হয় - তথাপি এমনটা হওয়া অস্বাবিক তো নয় কেননা ধরে নিচ্ছি "কেউ একজন এক্সিডেন্ট করলো এবং তীব্রভাবে ব্যাথা পেলো তাহলে সেই এক্সিডেন্টের স্বরূপ মৃত্যু হলে তাতে ব্যথা বা কষ্ট পাওয়া কেন অস্বাভাবিক হবে না?" তদুপরি এটাও নিশ্চয়ই জানা আছে যে ব্যাথার অনুভূতির একটি পর্যায়ে ব্রেইন এক্টিভিটিতে হিউম্যান সেন্স স্ট্যাবল থাকে না - তখন কোন কষ্টই অনুভূত হয়না; অপরাপর মৃত্যুর সময় মস্তিষ্কের ইএক্টিভ হওয়ার প্রক্রিয়া ব্যক্তি বিশেষে বিভিন্ন হতে পারে তাই মৃত্যু কষ্ট বিষয়টি ব্যক্তিরূপ রিলেটিভ ফ্যাক্টর। এটার সম্ভাবনাও থাকে যে মৃত্যুর সময় আমাদের যে কষ্ট লাগার অনুভূতি [ঠিক একদম মৃত্যুর সময়] সেটা নিষ্ক্রয় হয়ে যায় [কার কিসে কেমন আর কতোটুকুতে কিরূপ অবস্থিতিকে কষ্ট বলা যায় সেটিও তো রিলেশনাল রিলেটিভ ফ্যাক্ট]! অনেক সময় মৃত্যুর মুহূর্তে শরীরে ঝাকুনি/কাপুনি /খিচুনি সেটা রিফ্লেক্সের কারণে ঘটে - তবে সেটা দেখেই এটা ভাবনার কারন নেই যে তার মৃত্যুতে সে কতোই না কষ্ট পাচ্ছে অথচ হয়তো তারও পূর্বে তার ব্যথা অনুভবের সেনসেশানারী নার্ভ নিষ্ক্রিয় হয়ে গিয়েছে!
অন্যদিকে কোমা হতে ফিরে আসা বা নিয়ার ডেথ এক্সপেরিয়েন্স লব্ধ অধিকাংশ মানুষের মতে ঐ সময় তারা কোন ব্যথা বা কষ্ট অনুভব করেনি - সেই সময়ের বিচিত্র অনুভূতিগুলোও সাইকোলজির সহায়তায় যৌক্তিকভাবে বিশ্লেষণ করা চলে।
বর্তামানে পেইনলেস ডেথ নিয়েও গবেষণা চলছে যা হতে আশা করা যায় অদূর ভবিষ্যেতে আমরা সুন্দর জীবনের সমাপ্তিটাও সুন্দরভাবে ঘটাতে সক্ষম হবো।
মৃত্যু হলো মস্তিষ্কের জটিল জৈব রাসায়নিক বিক্রিয়ার সমাপ্তি; যেখানে মৃত্যুর পর মানুষের আত্মার কি হয় এরূপ প্রশ্ন নিতান্তপক্ষে অবান্তর কেননা যেখানে আত্মা বলতে মূলত হিউম্যান ব্রেইনের রাসায়নিক বিক্রিয়ার স্বরূপ কনশিয়াস, সাবকনশিয়াস ও আনকশিয়াস অংশের পারস্পরিক অবস্থিতি নির্দেশ করে সেখানে বিক্রিয়ার নিঃশেষে মস্তিষ্কের ইনক্টিভিটিতে আত্মা বা চেতনার কোনরূপ স্থিতির অবকাশই থাকে না!
মৃত্যু আপাতভাবে এখন অবধি সত্য - এই সত্যকে ভয় করে জয় করা যাবে না বরং স্বাভাবিকতায় তাকে গ্রহন করার মানসিকতায় কাম্য - এই সত্যটাই স্বাভাবিকতায় হলো সাহসিকতা; মৃত্যু মানেই দুঃখ নয় বরং মাঝে মাঝে দুঃখ বা কষ্ট রিলিফের অন্যতম উপায়ান্তরও বটে [মৃত্যু মানেই প্রশান্তি নয় তথাপি অশান্তি হতে পুরোপুরি রিলিফ পাওয়া একটি পথ] তবে জীবনের তাৎপর্যে ইচ্ছাকৃত মৃত্যুর মানসিকতা পরিহার করে জীবনে সফলতা লাভের প্রয়াসী হওয়ায় তো একরূপ মৃত্যু জয়!
স্বার্থক মৃত্যু হলো এমনি যেন আপনার মৃত্যুটাও যেন মানবজাতির অগ্রসরে ভূমিকা পালন করে - তাতে নানান উপায়ের মধ্যে মেডিকেল রিসার্চে দেহদান করা যেতে পারে অথবা অর্গান ডোনেট করা যেতে পারে [স্মৃতিফলকে স্মৃতিচারণ ব্যতীতও এমন মৃত্যুর ডেডিকেশন এপ্রিসিয়েট করা উচিত]।